ঢাকা , শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
নবীনগরে অন্যকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন এক চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমনগর মহাশ্মশান আধুনিকায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন নবীনগরে পানিতে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু আলমনগর মাঈনুউদ্দীন আহমেদ পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের দাবীতে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নবীনগরে ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের চক্রান্তে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন নবীনগর নবীনগরে আওয়ামীলীগের ব্যানার টানিয়ে সরকারি খাল দখল করে দোকন ঘর নির্মাণ নবীনগরে অটোরিকশার চাপায় শিশু নিহত নবীনগরে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের সংকট গ্রাহক জিম্মি নবীনগরে শোক সভার অনুষ্ঠানে তাবারক বিতরণে হট্টগোল
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপডেট নিউজ থিমটি ক্রয় করতে আমাদের কল করুন 01732667364। আমাদের আরো নিউজ থিম দেখতে ভিজিট করুন www.themesbazar.com

নবীনগরে প্রতিবন্ধী শিশুকে একাধিবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ০৩:০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
  • ২৪৮ বার পড়া হয়েছে

নবীনগর নিউজ:চোখে-মুখে আতঙ্ক নিয়ে কথাগুলো বলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ভোলাচং গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের ১১ বছরের প্রতিবন্ধী শিশুটি।

‘আমারে চকলেট খাওয়ার লাইগ্যা টেকা ও আম দেয়ার কথা কইয়া তার বাড়িতে নিয়া গামছা দিয়া বাইন্দা নির্যাতন করেছে। তিন থাইক্যা চাইরবার তার বাড়ি নিছে, আর আমার লগে ইতা করছে। হে সময় বাড়িতে কেউ আছিলো না। লিল মিয়া আমারে যা যা করছে, এই কথা কেউরে কইলে, চাক্কু দিয়া আমার গলা কাইট্টা দিবো- এমন ভয় দেখাইছে, এর লাইগা ডরে এই কথা আমি কেউরে কই নাই।’

বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে লিল মিয়ার (৫৫) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় গিয়ে প্রতিকার না পেয়ে গত ৩১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে লিল মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা মঙ্গল মিয়া। বিজ্ঞ ট্রাইবুনালের নির্দেশে ৭ জুন নবীনগর থানায় মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত লিল মিয়া পলাতক রয়েছেন। এবং তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ আছে। এদিকে পেশি শক্তি ও টাকার বিনিময়ে আসামিপক্ষ মামলাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসীর দাবি, নির্যাতিতা শিশুটি সহজ সরল, অনেকটা প্রতিবন্ধী, তার সাথে যা হয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। তার বাবা দরিদ্র হওয়ার কারণে, তাদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছে না। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মেয়েটি ন্যায় বিচার পাবে এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

মামলার বাদি মঙ্গল মিয়া জানান, ভোলাচং গ্রামের বাসিন্দা লিল মিয়া তার গবাধি পশুর জন্য প্রতিদিনই আশপাশের বাড়ি থেকে ভাতের মাড় সংগ্রহ করেন। আমি তার প্রতিবেশি মতি মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকি। লিল মিয়া ভাতের মাড় সংগ্রহ করার সুযোগে আমার ১১ বছর বয়সের সহজ সরল মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে।

তিনি অভিযোগ করেন, চকলেট খাওয়া টাকা ও আম দেয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। সর্বশেষ গত ২৭ মে বিকেলে ফাঁকা বাড়ি পেয়ে লিল মিয়া আমার মেয়ের মুখ চেপে ধরে নির্যাতন করার সময় চিৎকার শুনে আমরা গিয়ে ঘটনাস্থলে তাকে আটক করি। পরে তার বাড়ির লোকজন এসে আমাকে ও আমার ছেলে হাসানকে মারধর করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আহত অবস্থায় হাসানকে নবীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় সাতটি সেলাই লেগেছে। পরে ডাক্তারের কাগজ নিয়ে এই ঘটনায় নবীনগর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ ধমক দিয়ে আমাকে থানা থেকে বের করে দেয়। এ সময় আমার মেয়েকে ধমক দিলে সে ভয়ে কোনো কথা বলতে পারে নাই। পুলিশ আমাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সাইন রেখেছে।

তিনি বলেন, এই গ্রামে ভাড়া থেকে দিন মজুরের কাজ করি। এখানে আমার আপনজন কেউ নেই, গ্রাম্য বিচারে ন্যায় বিচার পাব না, সে কারণে আমি আদালতে মামলা করেছি। মামলার তদন্ত সঠিকভাবে হবে কিনা বলতে পারছি না। মামলা করার পর থেকে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি।

আরো জানা যায়, বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করতে স্থানীয় কাউন্সিলর ডা. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে মতি মিয়ার বাড়িতে ২৯ মে সোমবার শালিস বসে। আহত হাসান সভায় উপস্থিত না থাকায় সভাটি বাতিল করে সাহেব সর্দারগণ চলে যায়। পরে নির্যাতিতার বাবা মঙ্গল মিয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নং-১ ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মামলাটি ৩১ মে
দায়ের করেন।

এলাকাবাসী ও সাহেব সর্দারগণ জানান, এই ঘটনার পর থেকে আমরা আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। মঙ্গল মিয়া একজন গরিব মানুষ। তার মেয়েটি সহজ সরল। এক কথায় প্রতিবন্ধী। অবুঝ এ মেয়েটির সাথে যা হয়েছে, তা ন্যাকারজনক। এই ঘটনার সঠিক বিচার না হলে সমাজে এরকম ঘটনা আরো বাড়বে।

তারা আরো জানান, অভিযুক্ত লিল মিয়ার তিন কন্যা, স্ত্রী, ছেলের বউ ও নাতনি রয়েছে। কয়েক বছর আগে তার একমাত্র ছেলে মারা গেছে। আর স্ত্রী প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। লিল মিয়া আর্থিকভাবে সচ্ছল। তার স্বভাব চরিত্র নিয়ে সমাজে নানান কথা রয়েছে। লিল মিয়ার কু-দৃষ্টির কারণে তার মৃত ছেলের বউ বাড়িতে থাকে না। তার বাড়িতে যখন কেউ থাকে না, সে সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে একাধিকবার লিল মিয়া শারিরিক সম্পর্ক করেছেন- লোকজনের কাছ থেকে এমন তথ্য আমরা পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পেয়ে সামাজিকভাবে লিল মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়েটির বাবার অসহযোগিতার কারণে তার বিচার করতে পারি নাই। আশা করছি, আইনের মাধ্যমে মেয়েটি সঠিক বিচার পাবে।

আজ বিকেলে সরেজমিনে লিল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে থাকলেও তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জসীম উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন ‘ধর্ষণ নয়, মূলত মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে লিল মিয়া খারাপ কাজ করার চেষ্টা করেছিলো বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদী ও বিবাদী পক্ষে মারামারিও হয়েছে। আমরা এ নিয়ে মীমাংসার করার জন্য উদ্যোগও নিয়েছিলাম। কিন্তু এক পক্ষ বিচার সালিশীতে না আসার কারণে শেষ পর্যন্ত বিষয়টির মীমাংসা হয়নি।’

আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে লিল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে থাকলেও তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ সাইফুউদ্দিন আনোয়ার বলেন, মেয়েটিকে নিয়ে তার বাবা থানায় নিয়ে এসেছিল। ২৭ মে’র ঘটনায় মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধর্ষণের কোনো আলামত পুলিশ পায়নি। সে কারণে থানায় মামলা নেয়া হয়নি। পরে মেয়েটির বাবা বিজ্ঞ আদালতে এ নিয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি নবীনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ৭ জুন রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Facebook Comments Box

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নবীনগরে অন্যকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন এক চেয়ারম্যান প্রার্থী

নবীনগরে প্রতিবন্ধী শিশুকে একাধিবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা

আপডেট সময় ০৩:০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

নবীনগর নিউজ:চোখে-মুখে আতঙ্ক নিয়ে কথাগুলো বলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ভোলাচং গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের ১১ বছরের প্রতিবন্ধী শিশুটি।

‘আমারে চকলেট খাওয়ার লাইগ্যা টেকা ও আম দেয়ার কথা কইয়া তার বাড়িতে নিয়া গামছা দিয়া বাইন্দা নির্যাতন করেছে। তিন থাইক্যা চাইরবার তার বাড়ি নিছে, আর আমার লগে ইতা করছে। হে সময় বাড়িতে কেউ আছিলো না। লিল মিয়া আমারে যা যা করছে, এই কথা কেউরে কইলে, চাক্কু দিয়া আমার গলা কাইট্টা দিবো- এমন ভয় দেখাইছে, এর লাইগা ডরে এই কথা আমি কেউরে কই নাই।’

বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে লিল মিয়ার (৫৫) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় গিয়ে প্রতিকার না পেয়ে গত ৩১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে লিল মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা মঙ্গল মিয়া। বিজ্ঞ ট্রাইবুনালের নির্দেশে ৭ জুন নবীনগর থানায় মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত লিল মিয়া পলাতক রয়েছেন। এবং তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ আছে। এদিকে পেশি শক্তি ও টাকার বিনিময়ে আসামিপক্ষ মামলাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসীর দাবি, নির্যাতিতা শিশুটি সহজ সরল, অনেকটা প্রতিবন্ধী, তার সাথে যা হয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। তার বাবা দরিদ্র হওয়ার কারণে, তাদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছে না। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মেয়েটি ন্যায় বিচার পাবে এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

মামলার বাদি মঙ্গল মিয়া জানান, ভোলাচং গ্রামের বাসিন্দা লিল মিয়া তার গবাধি পশুর জন্য প্রতিদিনই আশপাশের বাড়ি থেকে ভাতের মাড় সংগ্রহ করেন। আমি তার প্রতিবেশি মতি মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকি। লিল মিয়া ভাতের মাড় সংগ্রহ করার সুযোগে আমার ১১ বছর বয়সের সহজ সরল মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে।

তিনি অভিযোগ করেন, চকলেট খাওয়া টাকা ও আম দেয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। সর্বশেষ গত ২৭ মে বিকেলে ফাঁকা বাড়ি পেয়ে লিল মিয়া আমার মেয়ের মুখ চেপে ধরে নির্যাতন করার সময় চিৎকার শুনে আমরা গিয়ে ঘটনাস্থলে তাকে আটক করি। পরে তার বাড়ির লোকজন এসে আমাকে ও আমার ছেলে হাসানকে মারধর করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আহত অবস্থায় হাসানকে নবীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় সাতটি সেলাই লেগেছে। পরে ডাক্তারের কাগজ নিয়ে এই ঘটনায় নবীনগর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ ধমক দিয়ে আমাকে থানা থেকে বের করে দেয়। এ সময় আমার মেয়েকে ধমক দিলে সে ভয়ে কোনো কথা বলতে পারে নাই। পুলিশ আমাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সাইন রেখেছে।

তিনি বলেন, এই গ্রামে ভাড়া থেকে দিন মজুরের কাজ করি। এখানে আমার আপনজন কেউ নেই, গ্রাম্য বিচারে ন্যায় বিচার পাব না, সে কারণে আমি আদালতে মামলা করেছি। মামলার তদন্ত সঠিকভাবে হবে কিনা বলতে পারছি না। মামলা করার পর থেকে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি।

আরো জানা যায়, বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করতে স্থানীয় কাউন্সিলর ডা. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে মতি মিয়ার বাড়িতে ২৯ মে সোমবার শালিস বসে। আহত হাসান সভায় উপস্থিত না থাকায় সভাটি বাতিল করে সাহেব সর্দারগণ চলে যায়। পরে নির্যাতিতার বাবা মঙ্গল মিয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নং-১ ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মামলাটি ৩১ মে
দায়ের করেন।

এলাকাবাসী ও সাহেব সর্দারগণ জানান, এই ঘটনার পর থেকে আমরা আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। মঙ্গল মিয়া একজন গরিব মানুষ। তার মেয়েটি সহজ সরল। এক কথায় প্রতিবন্ধী। অবুঝ এ মেয়েটির সাথে যা হয়েছে, তা ন্যাকারজনক। এই ঘটনার সঠিক বিচার না হলে সমাজে এরকম ঘটনা আরো বাড়বে।

তারা আরো জানান, অভিযুক্ত লিল মিয়ার তিন কন্যা, স্ত্রী, ছেলের বউ ও নাতনি রয়েছে। কয়েক বছর আগে তার একমাত্র ছেলে মারা গেছে। আর স্ত্রী প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। লিল মিয়া আর্থিকভাবে সচ্ছল। তার স্বভাব চরিত্র নিয়ে সমাজে নানান কথা রয়েছে। লিল মিয়ার কু-দৃষ্টির কারণে তার মৃত ছেলের বউ বাড়িতে থাকে না। তার বাড়িতে যখন কেউ থাকে না, সে সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে একাধিকবার লিল মিয়া শারিরিক সম্পর্ক করেছেন- লোকজনের কাছ থেকে এমন তথ্য আমরা পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পেয়ে সামাজিকভাবে লিল মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়েটির বাবার অসহযোগিতার কারণে তার বিচার করতে পারি নাই। আশা করছি, আইনের মাধ্যমে মেয়েটি সঠিক বিচার পাবে।

আজ বিকেলে সরেজমিনে লিল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে থাকলেও তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জসীম উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন ‘ধর্ষণ নয়, মূলত মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে লিল মিয়া খারাপ কাজ করার চেষ্টা করেছিলো বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদী ও বিবাদী পক্ষে মারামারিও হয়েছে। আমরা এ নিয়ে মীমাংসার করার জন্য উদ্যোগও নিয়েছিলাম। কিন্তু এক পক্ষ বিচার সালিশীতে না আসার কারণে শেষ পর্যন্ত বিষয়টির মীমাংসা হয়নি।’

আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে লিল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে থাকলেও তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ সাইফুউদ্দিন আনোয়ার বলেন, মেয়েটিকে নিয়ে তার বাবা থানায় নিয়ে এসেছিল। ২৭ মে’র ঘটনায় মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধর্ষণের কোনো আলামত পুলিশ পায়নি। সে কারণে থানায় মামলা নেয়া হয়নি। পরে মেয়েটির বাবা বিজ্ঞ আদালতে এ নিয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি নবীনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ৭ জুন রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Facebook Comments Box